নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: সিলেটের জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে গ্রাম এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। এ উপজেলার চারটি এলাকা দিয়ে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে বানের পানি লোকালয়ে ঢুকে ভেসে গেছে হাজার হাজার পুকুর ও ফিসারীর মাছ। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাটসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জকিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, জকিগঞ্জ-সিলেট ও শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের একটি অংশ। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত জকিগঞ্জের আমলশীদে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানি তিন সেন্টিমিটার কমলেও লোকালয়ে বাড়ছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে লোকজন পানিবন্দি হচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ছবড়িয়া, রারাই, বাখরশাল, পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের নরসিংহপুর এলাকার ডাইক ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে। ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ লোকজন ডাইক টিকিয়ে রাখার প্রাণপন চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে পারেন নি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিম্নাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ সময় সময় বেড়েই চলেছে। পানিতে গ্রামের রাস্তাঘাট, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, গোরস্থান পানিতে তলিয়ে গেছে। বানভাসি লোকজন ত্রাণ সহায়তা তেমন একটা পাচ্ছেন না। অনেকের ঘরে হাটু পানি কিংবা কোমর পানি। বাড়িঘর ছেড়ে লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রেসহ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। চলমান পরিস্থিতিতে রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, পানিবাহিত রোগবালাই ও গবাদিপশুর খাবার সংকটে চরম দুর্ভোগে বানভাসিরা।
বানভাসি লোকজন অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারনে বারবার বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। আমন খেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টানা তিনবারের বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সহজেই সম্ভব হবেনা। গৃহপালিত পশু পাখি নিয়েও চরম বেকায়দায় রয়েছেন। ত্রাণ সহায়তা গ্রামের ভেতরে যাচ্ছেনা। নৌকা না থাকায় চলাচলে চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসলিম জানান, মজুদে থাকা ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় শতাধিক মানুষ ওঠেছেন। গ্রামের ভেতরে যারা ত্রাণ পাচ্ছেন না তাদের তথ্য পাওয়া মাত্র ত্রাণ পৌছেঁ দেওয়া হচ্ছে। বরাদ্দের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
Leave a Reply